জাহান্নামের বর্ণনা ও প্রকারভেদ

যে সকল জিন ও মানব মহান রব্বুল আলামীনের আনুগত্য দাসত্ব পরিত্যাগ করে শয়তান ও কুপ্রবৃত্তির দাস সেজে নিজেদেরকে চালায় এব্বগ আল্লাহ ও তার প্রীয় মহামানব নবী-রাসূলগণের সত্যতা অস্বীকার করে ও শিরক করে। তাদের হুকুম অমান্য করে বা তাদের আদেশ-নিষেধের সমান্যতম তোয়াক্কা না করে মৃত্যুর পর অনন্ত অসীম কালের দুঃখ দুর্দশা কথা মনে না করে,

জাহান্নামের-বর্ণনা-ও-প্রকারভেদ
ক্ষণিকের এ দুনিয়ায় ভোগ বিলাসিতায় মুক্ত হয় এবং নিজেকে তাতে ভাসিয়ে দেয় এ সকল অবাধ্য জিন ও মানবের জন্য আল্লাহ তাআলা ভীষণ শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছেন। তিনি তাদেরকে সেখানে আজব দিবেন। জঘন্য আজাবের কোন পরিসমাপ্তি নেই, কোন বিরাম নেই। পবিত্র কোরআনের ভাষায় এই স্থানকে বলা হয় জাহান্নাম।

পেজ সূচিপত্রঃ জাহান্নামের বর্ণনা ও প্রকারভেদ

জাহান্নামের বর্ণনা ও প্রকারভেদ

জাহান্নামের বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রথমেই পুলসিরাতের বর্ণনা দিতে হয়। জাহান্নাম শব্দের বাংলা অর্থ হলো অতল সমুদ্র। জাহান্নামের উপর দিয়ে পুলসিরাত প্রতিষ্ঠিত। জাহান্নামের শাস্তির অন্যতম উপকরণ হলো আগুন। আগুন দিয়ে শাস্তি দেয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহ তাআলারই রয়েছে। জাহান্নামে সবকিছুই আগুন দ্বারা তৈরি। এই দুনিয়ার আগুনের সাথে দোযখের আগুনের কোন তুলনা করা যায় না।

কারণ এই দুনিয়ার আগুনের তুলনায় জাহান্নামের আগুন ৬৯ গুন বেশি তেজস্বী। পাশাপাশি সে আগুনের রং খুবই কালো অন্ধকার ময়। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি হাদিসে বলেন, দোযখের আগুনকে এক হাজার বছর তাপ দেওয়ার পর সেটি লাল বর্ণ ধারণ করে। এরপর ১ হাজার বছর তাপ দেওয়ার পর কিছুটা সাদা বর্ণ ধারণ করে।
এরপর আবার ১০০০ বছর তাপ দেওয়ার পর সেটি কালো বর্ণ ধারণ করেছে এবং এখনো সেই কালো বর্ণই আছে। জান্নাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে আরও একটি বিষয় উল্লেখিত হয় যে , জাহান্নামীদের আগুনে পোশাক পরিধান করতে দেওয়া হবে। আর আগুনের বিছানা পত্র দেওয়া হবে। তাদের খাদ্য হবে সক্ষম নামে কাটাযুক্ত গাছ। এবং তাদের পানীয় হিসেবে দেয়া হবে পচা দুর্গন্ধযুক্ত পূজো রক্ত।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,জাহান্নামের  সর্বনিম্ন শাস্তি গ্রহণকারীকে একজোড়া আগুনের তৈরির জুতা পরিধান করতে দেয়া হবে। সে জুতার ফিতা সমূহও হবে আগুনের তৈরি। যেটা পরিধান করার ফলে সে ব্যক্তির মাথার মগজ বিগলিত হয়ে টগবগ করতে থাকবে। এরূপ অবস্থা দেখে সে ব্যক্তি মনে করবে যে তাকেই বুঝি সবচেয়ে বেশি শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। অথচ এটি ছিল সর্বনিম্ন শাস্তি।

জাহান্নামের প্রকারভেদ এবং সংখ্যা

কষ্ট দান করার জন্য জাহান্নামিদের কৃতকর্মের ফলাফল অনুযায়ী জাহান্নামের সংখ্যা সাতটি। 
  • সায়ীবঃ মহান রাব্বুল আলামিনের বাণী সমূহ ও নিদর্শন সমূহকে যারা অস্বীকার করেছে তারা এই জাহান্নামে শাস্তি পাবে।
  • লাজাঃ এই জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে তারা, যারা যাকাত আদায় করে নি।
  • ছাক্কারঃ জাহান্নামে তারা শাস্তি ভোগ করবে যারা নামাজ কায়েম করেনি এবং গরিব-দুঃখীদের অন্ন দান করেনি।
  • জাহীমঃ যারা মহান আল্লাহর রাস্তা হতে অন্যদিকে সরে গিয়েছে এবং এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীর লোভে জীবন উৎসর্গ করেছে তারাই জাহীম জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।
  • জাহান্নামঃ যারা নিজের ইচ্ছায় আল্লাহর যেকোন বান্দাকে হত্যা করেছে তারা এই জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।
  • হাবিয়াঃ নানা ধরনের পাপকর্মে যারা লিপ্ত হয়ে খারাপ আমাদের মাধ্যমে পাপের পাল্লা ভারি করেছে তাদের এই হাদিয়ার শাস্তি ভোগ করতে হবে।
  • হোতামাঃ যারা অন্যের সাথে চোগলখুরি করেছে ওই ধরনের লোকেরা গুতামাতে শাস্তি ভোগ করতে থাকবে।
এসব উপকরণ ছাড়াও জাহান্নামীদের জন্য বিশাল আকারের বিষধর সাপ বিচ্ছু রয়েছে। এইসব সাপ বিচ্ছুর বর্ণনা দিতে গিয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদি সে সাপগুলো দুনিয়ার জমিনে সামান্য একটু নিঃশ্বাস ফেলতো তাহলে কিয়ামত পর্যন্ত দুনিয়ার জমিনে কোনরূপ ফসল উৎপন্ন হতো না। সেসব সাপ গুলো দংশন করতে থাকবে এবং এর বিষক্রিয়া চল্লিশ বছর পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে।

দংশনের তোড়ে এসে ব্যক্তির ৭০ গজ নিচে পড়ে যাবে। কিন্তু এ সকল শাস্তি কষ্টের মধ্যেও জাহান্নামিদের প্রাণ বের হবে না বরং জীবন্ত অবস্থায় তারা এসব যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকবে। এবং আজীবনই তাদের এর শাস্তি চলতে থাকবে। জাহান্নামের এই প্রকারভেদ থেকে বোঝা যায় প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার স্বীয় কর্ম অনুসারে জাহান্নামের এই স্তরগুলোতে প্রেরণ করা হবে।

জাহান্নামের আগুন যেমন হবে

যারা জাহান্নামী হবে তাদের আযাবের জন্য সর্ব প্রধান উপকরণ হলো আগুন। আগুনের সাথে পৃথিবীর কোন আগুনে তুলনা করা যায় না। আল্লাহ তাআলা বলেন, জাহান্নামের আগুনকে হাজার বছর উত্তপ্ত করবার পর তা লোহিত বর্ণ ধারণ করে। এবং তা দেখতে কটা লাল বর্ণের হয়। এরপর সেই আগুনকে আরো তীব্রতর অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন করার জন্য সেই আগুনকে আবারো আরও এক হাজার বছর ধরে উত্তপ্ত করা হয়।
এরপরে এই আগুন আরও তীব্রতর হয়ে শ্বেতবর্ণ ধারণ করে। এরপর এই তীব্র দাহিকা  সম্পন্ন আগুনকে আরো অধিক বেশি তীব্র করার জন্য পুনরায় আবার এক হাজার বছর কাল ধরে তীব্র করা হয়। এরপর এই আগুন কৃষ্ণ বর্ণ ধারণ করে। এবং বর্তমানে জাহান্নামের আগুনের রং গারো কৃষ্ণ বর্ণের এবং জাহান্নাম ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্ন কূপের মত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সাহাবাগণ কে বলেছেন,

এই পৃথিবীর আগুন হতে জাহান্নামের আগুন সত্তর গুন অধিক দাহিকা ক্ষমতা সম্পন্ন। সাহাবাগণ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর পবিত্র মুখে এই কথা শুনে বলেন, আমাদের এই পৃথিবীর এই আগুন তো পোড়বার জন্য যথেষ্ট। আমাদের এই আগুনই তো সবকিছু পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে পারে। প্রতিউত্তরে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তা ঠিক কিন্তু জাহান্নামিদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার জন্য আগুনকে পৃথিবীর আগুন হতে ৬৯ গুন বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন করে রাখা হয়েছে।

জাহান্নামী ব্যক্তি গণের সংখ্যা

জাহান্নামীদের সংখ্যা সম্পর্কে ইমাম মুসলিম এক হাদীসে উল্লেখ করেছেন, ফেরেশতাগণ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে বলবেন, ওহে পরওয়ার দিগার কতজন মানুষ হতে কতজন জাহান্নামী বের হবে। এরশাদ হবে প্রতি হাজারে ৯৯৯ জন জাহান্নামী বের করো।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এরশাদ করেন আমি বেহেশতে অভাবগ্রস্থ গরিব মুসলমান এবং জাহান্নামে মেয়ে লোকের সংখ্যায় বেশি দেখেছি। এই হাদিসটি মিশকাত শরীফে উল্লেখ আছে। এখানে উল্লেখ্য যে ৯৯৯ জন জাহান্নামী নির্ধারিত হবে ইয়াজুজ মাজুজ সম্প্রদায় থেকে।

জাহান্নামের দরজা এবং স্তর

কোরআন মাজিদে আল্লাহ বলেন, এবং তাদের (বেইমানের) সকলের জন্যই জাহান্নামের ওয়াদা করা হয়েছে। প্রতিটি দরজায় উক্ত বেঈমানদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রবেশপথ রয়েছে। হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে নবী করীম সাঃ এরশাদ করেন জাহান্নামের সাতটি দরজা আছে। তার মধ্যে একটি ঐ লোকদের জন্য যারা অন্যায় ভাবে আমার উম্মতের ওপর অস্ত্র ধারণ করেছে।

এই হাদিসটি মিশকাত শরীফের উল্লেখ আছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয়ই মুনাফিকগণ জাহান্নামের একেবারে নিম্নস্তরে প্রবেশ করবে। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা বর্ণনা করেন,জাহান্নামের উপরে নিচে সাতটি স্তর হবে। প্রত্যেক স্তরেই বিভিন্ন দরজা হবে।ওলামায়ে কেরাম বলেন,জাহান্নামের এক স্তর হতে অন্য স্তরের দূরত্ব ৫০০ বছরের পথ।
এতে সপ্তম স্তরটি অতি ভীষণ। এই স্তরের শাস্তির সীমা পরিসীমা নেই। এই স্তরের আগুনের ভয়াবহতা অন্যান্য স্তরের অপেক্ষা অনেক বেশি। প্রত্যেক স্তর ঊর্ধ্বস্তরের বিবিধ প্রকার শাস্তির কঠোরতায় ৭০ গুণ বেশি। প্রত্যেক স্তরে আগ্নেয় সমুদ্র, আগ্নেয় পর্বত এবং আগ্নেয় বৃক্ষ বিদ্যমান। আগ্নেয় পর্বত গুলোর উচ্চতা ৭০ হাজার বছরের পথ। প্রত্যেক স্তরে রয়েছে ৭০ টি আগ্নেয় পর্বত।

জাহান্নামের উদ্যান যেমন হবে

পূর্বে আলোচিত প্রত্যেক পর্বতে সত্তর হাজার আগ্নেয় উদ্যান, প্রত্যেক উদ্যানের ৭০ হাজার আগ্নেয় বৃক্ষ, প্রত্যেক বৃক্ষে সত্তর হাজার শাখা,প্রত্যেক শাখায় এক একটি সাপ লম্বায় তিন ক্রোশ এবং এক একটি বিচ্ছু  হৃষ্টপুষ্টতায় এক একটি উটের সমান। প্রত্যেক বৃক্ষে ৭০ হাজার আগ্নেয় মেওয়া এবং প্রত্যেক মেওয়া সত্তর হাজার কিটে পরিপূর্ণ রয়েছে। জাহান্নামের উদ্যান সমূহের সবকিছুই আগুনের হবে।

জাহান্নামের প্রাচীর এবং গভীরতা

হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এরশাদ করেন, জাহান্নাম চারটি বৃহৎ প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত রয়েছে। প্রতিটি প্রাচীর চল্লিশ বছরের পুরু। অর্থাৎ প্রতিটি প্রাচীরের পুরো অতিক্রম করতে ৪০ বছর সময় লাগবে। হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা বর্ণনা করেন, আমরা একদিন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর খেদমতে উপস্থিত ছিলাম।

এমতাবস্থায় আমরা কোন একটি জিনিস পতিত হওয়ার বিকট শব্দ শুনতে পেলাম। তখন হাজী সাঃ আমাদের প্রতি লক্ষ করে বললেন, তোমরা কি জানো এটা কিসের শব্দ। আমরা উত্তর করলাম আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই সবচেয়ে ভালো জানেন। তখন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম উত্তর করলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন একটি পাথর জাহান্নামের মুখ হতে নিচের দিকে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন।

অতঃপর তাক ক্রমাগত ৭০ বছর যাবত নিচের দিকে ধাবিত হওয়ার পর জাহান্নামের তলদেশে পৌঁছে। এ সে পাথরটির তলদেশে ধাক্কা খাওয়ারই শব্দ। হযরত আবু মুসা আশ্বারি রাঃ হতে বর্ণিত, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম জাহান্নামের গভীরতা সম্পর্কে এরশাদ ফরমান, যদি একটি পাথর পুলসিরাত হতে জাহান্নামের দিকে নিক্ষেপ করা হয় তাহলে ওই পাথর জাহান্নামের তরদেশে পৌঁছাতে ৭০ বছর সময় লাগবে।

জাহান্নামের অভ্যন্তরীণ অবস্থা সম্পর্কে

পাপীদের জাহান্নামের দ্বারে দাড় করার পর দ্বার খুলে দেয়া হবে। খুলে দেওয়া মাত্রই জাহান্নাম ভীষণভাবে গর্জে উঠবে এবং ভীষণ হতে ভীষনতর অগ্নিশিখা সমূহ উত্থিত হবে। এরপর জাহান্নাম বিকট চিৎকারে পাপীদের এ বলে ডাকবে, অতঃপর হে পাপীগণ আমার ভিতরে প্রবেশ কর। তারপর জাহান্নাম হতে বহু ফেরেশতা বের হয়ে পাপীদেরকে দলের বদ্ধ রূপে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। নিক্ষেপের পর পাপীগণ সত্তর বছরের পথ নিম্নে গিয়ে জাহান্নামের পাহাড়ে ধাক্কা খাবে। এ সময়ের মধ্যে তাদের দেহের চামড়া ৭০ বার পুড়ে ৭০ বার পুনর্গটিতে হবে।
জাহান্নামের-বর্ণনা-ও-প্রকারভেদ
জাহান্নামের পাহাড়ে উপনীত হয়ে পাপীগণ সর্বপ্রথম অতি উত্তপ্ত অতি কন্টকময় সিজ বৃক্ষ খেতে পাবে। পাপীগণ এ বৃক্ষ চিপাতে থাকা অবস্থায় শাস্তির ফেরেশতারা এসে লৌহ-মুদগড় দ্বারা তাদের নির্দয়ভাবে আঘাত করতে থাকবে। সেই আঘাতে পাপীদের অস্থিমজ্জা চূর্ণ-বিচনা হয়ে যাবে। অতঃপর ফেরেশতারা পাপীদের পা ধরে পাহাড় হতে নিম্নে নিক্ষেপ করবে। এ নিক্ষেপে পাপি বান আরও ৭০ বছরের পথ নিম্নে যে আরেকটি পাহাড়ের টক্কর খাবে। এ সময়ের মধ্যে আরও ৭০ বার তাদের দেহ চরম পরিবর্তিত হবে অথচ যে সিজ বৃক্ষ তারা চিবুচ্ছিল তা তেমনি ভাবে তখন পর্যন্ত তাদের মুখে থাকবে,

গিলতে পারবেনা। তখন তারা চিৎকার করে পানি চাইতে থাকবে। অস্থির হয়ে জাহান্নাম এর পাহাড় হতে প্রবাহিত নদী ও ঝর্ণার পানি পান করতে যাবে। পানি পান করা মাত্র মুখের চামড়া ও মাংস গোলে খসে পড়বে। পাপীগণ তথা হতে পালাতে উদ্যত হবে। তখন ফেরেশতাগন এসে লোহার মুদগর দ্বারা এরূপ প্রহার করবে যে তাদের অস্থি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে। তারপর তাদের দু পা ধরে শেখানো হতে হিচড়ে নিয়ে এসে পুনরায় জাহান্নামে ফেলে দিবে। এবারে লিখে পেয়ে আগুনের হলকার মধ্য দিয়ে জ্বলতে জ্বলতে ভাবিগণ ১৪০ বছরের পথ দোযখের তলদেশে যে পড়বে। এ সময়ের মধ্যে পাপীদের দেহ চর্ম ৭০ বার পরিবর্তিত হবে।

জাহান্নামের শ্বাস প্রশ্বাস সম্পর্কে

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এরশাদ করেন, গ্রীষ্মকালে তোমরা জোহরের নামাজ একটু বিলম্ব করে পড়বে। কারণ গ্রীষ্মের উত্তাপ দোজকের নিঃশ্বাসের প্রতিক্রিয়া। পুনরায় হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এরশাদ করেন, জাহান্নাম আল্লাহর দরবারে অভিযোগ করল, হে প্রভু আমার তেজ অনেক বেড়ে গেছে। এমনকি আমার এক অংশ অন্য অংশকে গ্রাস করে ফেলছে।
জাহান্নামের-বর্ণনা-ও-প্রকারভেদ
কাজেই আমাকে কিছু হালকা হতে অনুমতি প্রদান করুন। তখন আল্লাহ তায়ালা তাকে দুবার শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুমতি দিলেন। একটি গ্রীষ্মকালে আপরটি শীতকালে। কাজেই তোমরা গরমের দিনে যে ভীষণ গরম অনুভব করো তা জাহান্নামের উষ্ণ অংশের শ্বাসের প্রতিক্রিয়া। আর শীতকালে যে তোমরা ভীষণ শীত অনুভব করো তা জাহান্নামের শীতল অংশের শেষের প্রতিক্রিয়া। এটি বোখারী শরীফের হাদিস।

মন্তব্যঃ জাহান্নামের বর্ণনা ও প্রকারভেদ

জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য আমাদের ঈমান ঠিক করতে হবে। গাইরুল্লাহ থেকে নিজের অন্তরকে পবিত্র রাখতে হবে এবং কোন মাখলুকের প্রভাব অন্তরে স্থান দেওয়া যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমতো আদায় করতে হবে।

নামাজের সকল সুরা কেরাত ও দোয়া শুদ্ধভাবে এবং মাসায়েল সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে পাশাপাশি মৌলিক পর্যায়ে ইসলামী ইলম শিক্ষা করতে হবে। আল্লাহর কাছ থেকে বেশি বেশি জাহান্নামের থেকে পানা চাইতে হবে। কেননা আমরা কেউই জাহান্নামী হতে চাই না এবং জাহান্নামের শাস্তি ভয়াবহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমিন একটিভ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url