কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম ও সাব মিটারের বিল বের করার নিয়ম
বর্তমান যুগে যে কেউ চাইলেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই কারেন্ট বিল দিতে পারে। এবং ঘরে বসেই অনলাইনে কারেন্ট বিল চেক করতে পারবে।
পেজ সূচিপত্রঃ কারেন্ট বিল ও সাব মিটার বিল বের করার নিয়ম
- কারেন্ট বিল ও সাব মিটার বিল বের করার নিয়ম
- খুব সহজেই ফ্যানের বিদ্যুৎ খরচ বের করার উপায়
- অফিসে কারেন্ট বিল যেভাবে হিসাব করা হয়
- পল্লী বিদ্যুৎ বিল চেক করার নিয়ম
- অনলাইনে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার নিয়ম
- মিটার দেখে কারেন্ট বিল বের করার পদ্ধতি
- কারেন্ট বিল এর কাগজ হারিয়ে গেলে করণীয়
- গ্রিজারে কত ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়
- কারেন্ট বিল কমানোর উপায়
- মন্তব্যঃ কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম ও সাব মিটারের বিল বের করার নিয়ম
কারেন্ট বিল ও সাব মিটার বিল বের করার নিয়ম
কারেন্ট বিল বের করার জন্য প্রথমে একটি নিয়মের অনুসরণ করতে হবে। কারেন্ট বিল ইউনিট=p*T÷1000 এটি বিদ্যুৎ ইউনিটের একটি সূত্র। যেখানে P=Power এর একক (watt), T=Time এর একক (hour)। অর্থাৎ আপনি যদি ১০০০ ওয়াট এর কোন যন্ত্র ৩ ঘন্টা চালিয়ে থাকেন অর্থাৎ P= 1000 watt, T=3 hours তাহলে আপনার বিদ্যুৎ বিল=P*T÷1000=1000*3÷1000=3 unit।
সাব মিটার বলতে বোঝায় যখন একটি বাড়িতে অনেকগুলো মিটার লাগানো হয় তখন প্রথম মিটারটি মিট মিটার এবং তার অধীনে সবগুলোকে সাবমিটার বলা হয়। বর্তমানে যে মিটারগুলো লাগানো হয় সেগুলো ডিজিটাল মিটার এবং এগুলো চক্রাকারে কয়েকটি রিডিং দেয় এবং অবিরাম চলতে থাকে।
ভোল্টেজ(v) ২২০+/- কাছা কাছি রিডিং দিবে voltage/volt/v দেখাতে পারে।
লোড কারেন্ট বা Ampere/Amp/A দেখাতে পারে।
বিদ্যুত ইউনিট বা কিলোওয়াট আওয়ার বা kWH/KWH দেখাতে পারে।
সাব মিটারিং বলতে একটি বাড়ির ভিতরে সংরক্ষণ বিদ্যুৎ খরচ পর্যবেক্ষণ দ্বার বোঝাবে। সাধারণভাবে দেখা যায় একটি বাড়িতে অনেকগুলো ভাড়াটিয়া যখন বসবাস করে তখন একটি মাস্টার মিটার থাকে অথবা প্রতিটি ঘরের জন্য একটি মিটার থাকে। তখন সেটির ইউটিলিটি বিলের জন্য দায়ী থাকে সাবমিটারিং সম্পত্তির মালিক।
খুব সহজেই ফ্যানের বিদ্যুৎ খরচ বের করার উপায়
গরমকালে প্রতিটি বাড়িতেই খুব বেশি পরিমাণে ফ্যান চালানো হয়। যদি আপনি আপনার বাড়ির ফ্যানে কতটুকু বিল আসতে পারে এই মাসে সেটি বের করতে চান তাহলে খুব সহজেই সেটি বের করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ বিকাশ পেমেন্টের মাধ্যমে প্রতিদিন ৩০০ -৪০০ টাকা ইনকাম
সাধারণভাবে একটি ফ্যান ৬০ থেকে ১০০ ওয়াটের হয়ে থাকে। যদি বাসা বাড়িতে প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে একটি ফ্যান চলে এবং সেই ফ্যানটি যদি ৬০ ওয়াটের হয়ে থাকে তাহলে বিদ্যুৎ খরচ হবে (৬০*১০০)=৬০০ ওয়াট বা ৬০০÷১০০০=০.৬ কিলোওয়াট। বিদ্যুৎ বিল যদি প্রতি ইউনিটে ৭ টাকা ৫০ পয়সা হয় তাহলে ওই ফ্যানটি যদি ১০ ঘণ্টা চলে তাহলে খরচ হবে (৭.৫০*০.৬)=৪.৫ বা ৪ টাকা ৫০ পয়সা। এবার এই সংখ্যাকে ৩০ দ্বারা গুণ করলে হবে (৪.৫০*৩০)=১৩৫। অর্থাৎ ওই মাসে বিল আসবে ১৩৫ টাকা। এভাবে খুব সহজে আপনি আপনার বাড়ির ফ্যানের বিদ্যুৎ বিল বের করতে পারেন।
অফিসে কারেন্ট বিল যেভাবে হিসাব করা হয়
এবারে জেনে নেওয়া যাক অফিসের কারেন্ট বিল হিসাব কিভাবে করা হয়। নিচের পদ্ধতিটি অনুসরণের মাধ্যমে অফিসে কারণ বিলের হিসাব করা হয়।
অফিসে ইউনিট হিসাব করা হয় (মোট ওয়াট *মোট ঘন্টা)÷১০০০= ইউনিট বা (100w*10H)÷1000=1 unit। অর্থাৎ ১০০ ওয়াট এর যে কোন যন্ত্র যদি ১০ ঘন্টা চলে এক ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হবে।
এখানে বিদ্যুৎ বিল হিসাব করার জন্য আমাদের একটি নিয়ম অনুসরণ করতে হবে এবং তারপর বাসা বাড়ি বা অফিসে বা যে কোন স্থানে বিদ্যুৎ বিলের হিসাব বের করতে পারবো।
নিট বিল=এনার্জি বিল+মিটার বিল
এনার্জি বিল=এক মাসের ব্যবহৃত ইউনিটের পরিমাণ(KWH)
মিটার বিল=ডিমান্ড চার্জ+সার্ভিসিং চার্জ
ডিমান্ড চার্জ=১৫ টাকা পার কিলোওয়াট
সার্ভিস চার্জ=১০ টাকা সিঙ্গেল ফেজের জন্য এবং ৩০ টাকার থ্রি-ফেজ এর জন্য
ভ্যাট=নিট বিলের সাথে ৫ শতাংশ যোগ
নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর বিল পরিশোধ না করলে জরিমানা=নিট বিলের সাথে ৫ শতাংশ যোগ
লোডের হিসাবঃ উপরে দেখানো হয়েছে নিট বিল=এনার্জি বিল+মিটার বিল। এনার্জি বিল জানার জন্য এক মাসের ব্যবহৃত ইউনিটের পরিমাণ ও প্রতি ইউনিটের মূল্য জানতে হবে। প্রতি মাসে কি পরিমান ইউনিট ব্যবহার করছেন সেটি জানার জন্য লোডের হিসাব করতে হবে। কি কি লোড আপনি ব্যবহার করছেন এবং সেই লোড গুলো কত ওয়াটের সেটি জানতে হবে।
1Kwh=1 unit
1hp=746 watt
power,p=vlvos (single phase)
power,p=√3vlcos (three phase)
1000W=1kW
h= time (ঘন্টায়)
Kw কে ঘন্টা (সময়) দিয়ে গুন করলে ইউনিট বের হবে।
যদি আপনার লোড হোয়াট এ দেওয়া থাকে তাহলে সেটা সরাসরি w এর মান বসালেই হবে। যদি লোডে কারেন্ট ও ভোল্টেজ এর মান দেওয়া থাকে তা পাওয়ারের সূত্র অর্থাৎ p দিয়ে বের করতে হবে।
চলুন এবার দেখে নেওয়া যাক একটি বাসা বাড়ির প্রতিমাসে কিরকম বিল আসে। ধরুন একটি বাড়িতে ৮০ ওয়াট এর দুটি ফ্যান, ৪০ ওয়াটের তিনটি লাইট, ২২০ ভোল্ট, ০.৪ এম্পিয়ার, ০.৮pf একটি টেলিভিশন এবং ২ হর্সপাওয়ারের একটি পানি তোলার মটর দৈনিক গড়ে 6 ঘন্টা চলে তাহলে ওই চলতি মাসের বিদ্যুৎ বিল কত টাকা হবে যদি মাসটি ৩১ দিনের এবং যদি প্রতি ইউনিটের মূল্য ৭ টাকা হয়।
80 ওয়াটের দুইটি ফ্যান একদিনে যে ওয়াট খরচ হবে=80*2=160w
40 ওয়ার্ডের তিনটি লাইটের জন্য এক দিনে যে ওয়াট খরচ হবে =40*3=120
1 টি টেলিভিশনের জন্য এক দিনে যে ওয়াট খরচ হবে=pVlcos=2200.40.8=70.4W
2hp একটি মোটর একদিনের যে ওয়াট খরচ হবে=2*746=1492W
ওয়াট কে ১০০০ দিয়ে ভাগ করলে কিলোওয়াট পাওয়া যায়। তাহলে ঐ বাড়িতে কিলোওয়াট খরচ হবে=1842.4÷1000=1.8424kW। যদি ছয় ঘন্টার জন্যে চলে তাহলে =1.8424*6=11.0544kwh
মাসটি 31 দিনে হওয়ার কারণে ইউনিট খরচ হবে=11.0544*31=342.686kwh। প্রতি ইউনিটের মূল্য 7 টাকা করে ওই মাসে বিদ্যুৎ বিল হবে =342.686*7=2398.802 টাকা।
আমরা যদি উক্ত সমাধানের বাস্তবিক সমাধান চিন্তা করি তাহলে 342.686kwh নিতে হবে। কেননা নিট বিল=এনার্জি বিল+মিটার বিল।
এনার্জি বিল=এক মাসে ব্যবহৃত ইউনিটের পরিমাণ*প্রতি ইউনিটের মূল্য। kwh=342.686kwh
1 -75=75
76-200=125
201-300=100
301-342=42.686
সর্বমোট=75+125+100+42.686=342.686। এই মাসে বিদ্যুৎ বিল ব্যবহারের জন্য এনার্জি বিল=(753.8)+(1255.14)+(1005.36)+(42.3865.63)=1703.82 টাকা।
সার্ভিস চার্জ=১০ টাকা
ডিমান্ড চার্জ=৩০ টাকা
ভ্যাট=৫%
মিটার বইলা=ডিমান্ডা চার্জ+সার্ভিস চার্জ=৩০+১০=৪০ টাকা
মোট বিল=(১৭০৩.৮৩+৪০)=১৭৪৩৩.৮২ (ভ্যাট ছাড়া)
৫% ভ্যাট=১৭৪৩.৮২*৫%=৮৭.২৩ টাকা
মিটার ভাড়া ১p=৪০ টাকা
সুতরাং, নিট বিল=১৭৪৩.৮২+৮৭.২৩.৪০=১৮৭১.০৫ টাকা
যদি কেউ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ না করে তাহলে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে।
পল্লী বিদ্যুৎ বিল চেক করার নিয়ম
পল্লী বিদ্যুৎ বিল বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে চেক করা যায়। এজন্য একটি স্মার্ট ফোনে বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে পিন ডায়ালের মাধ্যমে চেক করা যায়। সেজন্য প্রথমে বিকাশ অ্যাপ লগইন করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আয়
যদি কেউ বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে বিল পরিশোধ করে তাহলে বিল পরিশোধ করার সময় বিলের পরিমাণটিও দেখে নেওয়া যেতে পারে। বিকাশ অ্যাপ লগইন করার পর টেবিল অপশন থেকে ইলেকট্রিসিটি অপশনে যেতে হবে। বিদ্যুৎ বিলের কাগজে থাকা অ্যাকাউন্ট নাম্বার দিয়ে যে মাসের বিল দেখতে চান সেই মাসের বিল দেখতে পারেন।
কেউ যদি ডায়াল করার মাধ্যমে বিদ্যুৎবিত দেখতে চান তার জন্য নিয়মসমূহ হলো:
- প্রথমে মোবাইল ফোনে *247# ডায়াল করতে হবে
- 5 নাম্বার অপশান থেকে বিল পেয়ে সিলেক্ট করতে হবে
- 1 নাম্বার অপশান এ ক্লিক কঅরে electricity বাছাই করতে হবে
- 1 নাম্বার অপশন এ ক্লিক করে pally biddut সিলেক্ট করতে হবে
- 1 নাম্বার অপশান থেকে cheak bill সিলেক্ট করতে হবে
- বিলের কাগজ থেকে sms bill A/C দিতে হবে
- mmy ফরমাটেবিল এর মাস ও বঅছর দিতে হবে
- বিকাশ পিন দিয়ে বিল চেক নিশ্চিত করতে হবে
অনলাইনে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার নিয়ম
- বিকাশ অ্যাপ এ ঢুকে প্রথমে পিন দিতে হবে এবং হোমস্ক্রিনে আসতে হবে। সেখান থেকে টেবিল অপশনে যেতে হবে।
- টেবিল এই স্ক্রিনের প্রতিষ্ঠানের ধরন ক্যাটাগরি থেকে বিদ্যুতের ট্যাপ করলে নিচের দিকে বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রতিষ্ঠান দেখাবে।
- আপনি যে বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠানের আওতায় বিদ্যুৎ বিল জমা দিবেন সেটি নির্বাচন করতে হবে।
- এবার পোস্টপেইড এর ক্ষেত্রে বিলের সময়সীমা লিস্ট থেকে যে মাসের বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হবে সেই মাস নির্বাচন করতে হবে এবং কাস্টমার নাম্বার দিতে হবে। এই কাস্টমার নাম্বারটি মূলত আর ডিজিটের একটি সংখ্যা যেটি প্রতি মাসে সরবরাহকৃত বিগত মাসের বিদ্যুৎ বিলের কপিতে উল্লেখ থাকে।প্রিপেইড এর ক্ষেত্রে যোগাযোগ রেফারেন্স নাম্বার দিতে হবে।
- এরপর বিলের সময়সীমা নির্বাচন করার সাথে সাথেই যে মাসের জন্য বিল দিতে চান সেই মাসের বিদ্যুৎ বিল দেখাবে।পরের স্ক্রিনে নিয়ে বিদ্যুৎ বিল এর পরিমাণটি উল্লেখ করে পিন নাম্বার দিতে হবে তারপর বিকাশ একাউন্টে যথেষ্ট পরিমাণে ব্যালেন্স থাকলে কনফার্ম বাটনের চাপ দিলে বিল পরিশোধ সম্পন্ন হবে।
আমিন একটিভ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url